বুধবার, ৩ মে, ২০১৭

তিনটি কবিতা : বন্য পীতম

আমার পরিচয়


আয়নার সামনে দাঁড়াতে আমার ভীষণ ভয় হয়,
নিজেকে দেখে বিব্রত হই, আমার প্রশ্নের সামনে নিতান্ত অসহায় হয়ে ঠিক আমাকে অনুকরণ করে আমার প্রতিবিম্ব।
আমি কে কিংবা কী?
আমার প্রশ্নের উত্তর নিয়ে কোথাও কেউ নেই,
না কোন ধার্মিক আমাকে বলেছে আমার পরিচয় কিংবা কোন অবিশ্বাসী নাস্তিক আমাকে আমার উত্তর পর্যন্ত পৌঁছাতে সাহায্য করেছে।
শিক্ষক, পরিবার অথবা নাগরিক সভ্যতা,
কোন প্রবন্ধ, গল্প উপন্যাস কিংবা কবিতা,
কোথাও কোন উত্তর নেই বরং আমার প্রশ্নকে আরও জটিল থেকে জটিলতর পথে হাঁটাতে বাধ্য করা হয়েছে।
আমার উত্তর নিয়ে হাজির হয়নি কোন দেবদূত।
প্রাচীন উপকথা থেকে সায়েন্স ফিকশন,
কোথায় আমার উত্তর?
অন্ধকার হাতড়ে বেঁচে থাকা সমাজ আত্মপরিচয় নিয়ে ঈশ্বরকে প্রশ্ন করতে ভয় পায়।
আমি ভয় পাই আমাকে, আমাকে অনুকরণ করা অবাস্তব প্রতিবিম্ব কে।
আয়নার সামনে দাঁড়াতে সত্যিই ভীষণ ভয় হয়।
যে কবিতার উৎসর্গপত্রে কেউ নেই 

মধ্যদুপুরে কবিতা কতোটা ভালোবাসবে?
ক্ষুধা তৃষ্ণায় কাতর একটা দুপুরে কবিতার উপযোগ কতটুকু তোমার কাছে?
মুখরোচক খাবার সরিয়ে সে হাতে কবিতার বই তুলে নিতে পারবে?
নাকি তুমিও আর দশটা সাধারণ মানুষ? কবিতার বদলে সুস্বাদু কোন লাঞ্চে-ই তোমার আগ্রহ বেশি?
নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে হাতের হেলাল হাফিজ ছুড়ে হাতে তুলে নিবে সুসজ্জিত খাবার প্লেট?
গলা ভেজাবে দামি কোন পানীয় তে?
চোখে রসনাবিলাসের আমুদেপনা?
তুমিও আর দশটা সাধারণ মানুষ হবে?
অথচ মধ্যদুপুরে খাবার নয় বরং হেলাল হাফিজ অথবা রুদ্র দা'র কবিতা পছন্দ করবে এমন কারো প্রেমে পড়ার জন্য-ই হয়তো জন্মেছিলাম।
তুমি বরং কবিতা হও।
অন্তত বসন্তের মধ্যদুপুরে আমি কবিতা ভালোবাসি।


আকাশ কবিতা এবং দুটো চোখ


আকাশ ভালোবাসো?
যারা আকাশ ভালোবাসে হুট করে একদিন তাদের হৃদয়টা আকাশ হয়ে যায়...
"পৃথিবীর কারও হৃদয় কখনো আকাশ হয়?" ভেবে বিস্মিত হওয়া দুটি চোখও যে আকাশ হতে পারে,
সে কথা সম্ভবত এ পৃথিবী ভুলে গেছে।
আমি বিষাদের কবি।
মধ্যদুপুর অথবা নীরব সন্ধ্যায় আমার কলমে হঠাৎ জোয়ার আসে,
জন্ম হয় কবিতার।
কবিতারা আকাশ হয়েই জন্মে।
প্রাচীন ঈশ্বর কি জানে জটিল গাণিতিক হিসেবে ও দুটি চোখকে কবিতা বলায় আর কোন প্রথাগত বাঁধা নেই।
কবিতা, আকাশ কিংবা ও দুটি চোখ,
আমার প্রিয় তালিকার দৈর্ঘ্য বেড়েই চলেছে...


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন