শ্বেতা শতাব্দী এষের কবিতা


সাজকক্ষে 


গ্রিক অথবা ভারতীয় মিথোলজীর কোনো নায়ক নয় সৌম্য।
প্রমিথিউস, ইকারুস, সিসিফাস, অভিমন্যু এরকম কেউ নয় সে।
নিতান্ত সাধারণ কিংবা সাধারণের চেয়েও কিছু কম হয়ে বেঁচে থেকে থেকে,
আয়তক্ষেত্র আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সৌম্য ভাবে— হেরে গেলাম!
এখানে যুদ্ধ কার সাথে কার, যুদ্ধভূমির ভৌগোলিক সীমা অথবা লক্ষণরেখা
কোনো কিছুই নির্ধারিত নয়।
একটা ক্ষয়ের ভেতর দিয়ে একটু একটু করে এগোতে থাকা সৌম্যের
ভোরের সূর্যকে কখনো কাতর মনে হয়। মেঘেরা চোখের আয়নায়
বিদ্যুৎরেখায় টেনে দেয় নৈকট্ট থেকে দূরত্বের অভিযাত্রা পথ—
যুদ্ধটা সমভাবে চলমান—
সশস্ত্র শব্দেরা মাথার ভেতর কৃষ্ণচূড়ার বিস্ফোরণে ফোটে— হয়তোবা গড়ে ওঠে
ক্ষণস্থায়ী স্ফটিক মহল, তবু সেই মহল বা পৃথিবী সৌম্যের একান্ত নয়,
একান্ত বলে কিছু নেই, যেখানে মানুষেরা জানে—
শাশ্বতই মানুষ একা!
যদি বিচ্ছিন্ন মানুষেরা ভাবে— আমরা সবাই একা, তবে সূর্যকে বলুক আকাশ—
পৃথিবী কক্ষপথ ঘুরে ঘুরে যেন আর ভোরকে না-পায় ।
সৌম্য ভেবে ভেবে ক্লান্ত হয়! তবু এই ক্লান্তির ঊর্ধ্বে উঠে
পরাজয়ের বিবশতা নিয়েও সে জানে—
কীভাবে জিতে যাওয়া যায়— ছায়ার কাছে, নীলের কাছে!
পৃথিবীর সমস্ত ট্রেজিক নাটকে সৌম্য শুধু এক করুণ মানব।
যুদ্ধবিজিত ক্ষত, ভাঙা রথ পড়ে রয় মঞ্চের পাশে—
সাজকক্ষে সে কখনো মুখোশ পড়ে না!

● লেখক : শ্বেতা শতাব্দী এষ, ঢাকা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন