সুধীবৃন্দ
নীরবতা বজায় রাখুন
সম্ভব হলে হাতের পাতায় ঢেকে রাখুন অবিশ্বাসী চোখ।
আমরা শান্তিপূর্ণ মৃত্যু ও প্রজনন-প্রক্রিয়াকে
একটা বিধি-সম্মত রূপ দিতে চাই।
ছিদ্রান্বেষীরা যে যাই বলুক, আমরা নরহত্যা কিংবা
ধর্ষণে বিশ্বাস করি না।
অমানুষদের কথা বলতে পারছি না
কিন্তু মানুষ আমাদের পাশেই আছেন।
কলম বন্ধ রাখুন
কলমের অনুশাসন এখন অচল
অহেতুক কালি ছিটিয়ে শব্দের অপচয় করবেন না।
সম্ভব হলে সারাদিন পূজা-পর্যায়ের গান শুনুন
অথবা মিষ্টি করে সৃষ্টি করুন ভালোবাসার শ্লোক।
কিংবা মানুষ ঘুমিয়ে পড়লে নীল-ছবিতে লাল-কমল হয়ে
ডুবে থাকুন সারারাত।
আমরা শিক্ষা-ব্যবস্থাটাকে ঢেলে সাজাতে চাই
দেবশিশুদের হাতে তুলে দিতে চাই অহিংস পিস্তল ও সানগ্লাস।
আর শিক্ষা দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে পড়া দ্রোণাচার্যদের
একটু শান্তিপূর্ণ বিশ্রামের ব্যবস্থা করতে চাই।
ছিদ্রান্বেষীরা যে যাই বলুক , আমরা আচার্য-হত্যা কিংবা
ভালোবাসাহীন ক্ষমতা দখলে বিশ্বাস করি না।
আমরা চাই এই বিধিসম্মত শিলাবৃষ্টির দেশে
আইন আইনের পথে ঘুমিয়ে পড়ুক।
মিছিলে যাবেন না
মিছিল বড় সংক্রামক।
মানবাধিকার কমিশনেও যাবেন না
ওখানে কোনও মোহিনী যুবতী নেই।
বরং নিঃসঙ্গ লাগলে ফোন করুন এই নম্বরে : ৯৯৩৩৪৪১৬...
কিংবা চলে আসুন আমাদের শীততাপ-নিয়ন্ত্রিত বসন্ত কেবিনে।
আমরা এই স্বপ্নভূমিকে মুক্তাঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলতে চাই
যেখানে বাঘ থাকবে বাঘের মতো
আর ইঁদুর ইঁদুরের মতো।
ছিদ্রান্বেষীরা যে যাই বলুক, আমাদের কোনও পোষা হায়না নেই।
আমাদের পরিকল্পনা আছে : আগামী বছর
মাইলের পর মাইল রোপণ করা হবে ২০১৮টি সাদা গোলাপের চারা।
আর প্রত্যেকটি অশান্ত ইঁদুরের রহস্যময় মৃত্যুর পর
আকাশে ওড়ানো হবে একশ আটটি সাদা পায়রা।
মনে রাখবেন : এই নশ্বর বঙ্গদেশে আমিই অবিনশ্বর
সমস্ত বেদের মধ্যে আমিই সামবেদ
এই পশুখামারের দেশে আমিই চেতনা
বালখিল্য পুরোহিতদের দেশে আমিই বৃহস্পতি
সমস্ত শব্দের মধ্যে আমিই ওংকার
এই টিলা-পাহাড়ের দেশে আমিই একমাত্র হিমাদ্রি-শিখর
তৃণভোজী জরাজীর্ণ গাভীদের গ্রামে আমিই রূপসী কামধেনু
এই নির্বিষ নাগিনীকন্যার পাতালপুরীতে আমিই উলূপী।
অতএব সুধীবৃন্দ
এই গাঙ্গেয় আকাশে আর কোনও গাংচিল নেই
এ অরণ্যে নেই অন্য কোনও ধর্মের বিড়াল
আমিই গাংচিল, মার্জারও আমি , আমাকেই খুঁজে দ্যাখো , খোঁজো
সর্ব্বধর্ম্মান্ পরিত্যাজ্য মামেকং শরণঙ্ ব্রজ।
● লেখক : উত্তম দত্ত, পশ্চিমবঙ্গ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন