প্রত্যুষ দা
চুলের গন্ধ বোতলে ভরে-
বেঁচে ছিলেন প্রত্যুষ দা মৃত্যু পর্যন্ত।
ভোরের খোলা জানালায় ক্যামেলিয়ার গন্ধ নিয়ে বাতাস ছুঁটে আসে।
পর্বত আরোহীর মতো জীবনের সোপান বেয়ে নেমে পড়া দুর্লভ অনুভূতি-
বুঝতে না পারার ব্যর্থতা রোজকার মদের গেলাসে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
প্রত্যুষ দা বেঁচেছিলেন চুয়াল্লিশ বছর দুই মাস সতেরো দিন।
চুয়াল্লিশ তম জন্মদিনে আমি ছিলাম তার স্বর্ণকুঠিরে।
স্লিভলেস ব্লাউজের বাইরে খোলা হাত বেয়ে তার হাত যখন
নাভিমূলে এসে স্থির হয়েছিলো নিউটনের বিখ্যাত আপেলের মতো
এক মুহুর্তের জন্য পৃথিবী স্থির হলে প্রত্যুষ দা হেসে বলেছিলো-
কামনার কেন্দ্রবিন্দুতে পৃথিবী ঘুমালে মহামানব হয়ে যাওয়া যেতো।
কিন্তু কুমারী প্রেমিকা নিয়ে খেলতে পারা অমরত্বের সমান।
খোলা বুকে নাক ঘষে বলেছিলাম- যদি ভালোবাসা বলে কিছু না থাকে
তবে ঈশ্বর কেনো পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলো?
হুইস্কির বোতল মুখে চেপে প্রত্যুষদা আওড়াতে থাকলেন বিদায়ের গান।
আমিও প্রেমিক ছিলাম।
আমার প্রেম স্বর্গে যেতে পারেনি এমিলি।
রূপান্তরিত হয়ে টিকে আছে একটি বোতল ভর্তি গন্ধে।
দেহ পঁচে গেলেও গন্ধ থেকে যায়।
সাইপ্রেস বৃক্ষের মতো চাপা আর্তনাদে বেড়ে ওঠে।
অথচ আমি প্রাচুর্যে বিশ্বাসী ছিলাম,
অভাব কখনো গ্রাস করেনি আমার মন।
সম্ভবত রাতের শেষে ঘুমন্ত তার অবয়বে তাকিয়ে আমি বাঁচতে শিখেছিলাম।
আমাকে বাঁচিয়ে রেখে প্রত্যুষ দা সমাধিস্থ হলো নির্জন কবরে।
আজ আমিও বেঁচে আছি স্থির চিত্তে চলে যাওয়া বেদনার পথ ধরে-
ভোরের হাওয়া ক্যামেলিয়ার গন্ধ ছড়ায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন