ইরাবতী তটিনী -এর কবিতা

বাবার চোখ দিয়ে পৃথিবী দেখা



বারান্দার দ্বারে চাঁদটা এমনই
স্থির হয়ে আছে;
যেন,লক্ষ্মী পটে কৃষাণীর নিষ্পলক চোখ!
যতটা স্থির থাকে সদ্যবিবাহিত
শাখা সিঁদুর পরা মেয়েটা!
এই যুবতী চাঁদের গর্ভে আমি
হারিয়ে যেতাম;
বাবার চোখ দিয়ে!
আমি কখনও চন্দ্রস্নানে যাইনি,
সমুদ্রের বুকে চাঁদের ঝকঝকানিও না!
সম্ভবত বাবাও না!
তবে- বাবার চোখের ভিতর
আমাকে ডুবুরির মতো;
নামিয়ে দিয়ে ঘুরিয়ে এনেছে
সাত মহাসাগরের তলদেশে।
চোখে ডুবে দেখেছি নটিলাসের যাত্রাপথ;
দেখেছি দ্বীপপুঞ্জের
ধনরত্ন,পাখির দুঃখ-
আহত বন মোরগের রক্তাক্ত পালক!
কিছু কুড়িয়ে এনে জমিয়েছিলাম-
বাবার বুকপকেটে।
পাহাড়ী সবুজের মাঝে নগ্নপদ
পেলে পেলে,
ঘুম ঘুম মাদকতায় টলতে টলতে,
এখনও মাঝে মাঝে নেমে যেতে
ইচ্ছে হয়-
বাবার চোখ দিয়ে সমুদ্রের তলদেশে!
বাবাটা ছিল এমন-
বেশিক্ষণ আড়ালে থাকলে,
বড্ড অস্থির হয়ে যেতাম!
ফুল পাখিদের দিয়ে পাঠিয়ে
দিতাম জরুরী বার্তা!
এখন তুমি কোথায় -
কোন সমুদ্রের তলদেশে ডুবমেরে
বসে আছো গো বাবা;
তটিনীর মনের দেয়ালে আঙুলের 
ছাপ ফেলে?
পালাবার আগে উচিত ছিলো না তোমার,
সমুদ্রের তলদেশে নামার মন্ত্রখানা
শিখিয়ে যাবার!?

ইরাবতী তটিনী
... ... ... 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন