বব ডিলান (Bob Dylan):
জন্মগ্রহণ করেছেন ১৯৮১ সালের ২৪ মে। তাঁর জন্ম স্থান ডুলুথ, মিনেনসোটা, আমেরিকা। তিনি মূলত গায়ক, গীতিকার ও সুরকার। তাঁর রচিত গান গীতি কবিতা হিসেবে বিবেচিত হয়। তিনি ২০১৬ সালে সাহিত্যে নোবেল অর্জন পুরষ্কার করেছেন। তাঁর বিখ্যাত কয়েকটি গীতি কবিতার অনুবাদ করা হল।
_____
উত্তরের দেশের মেয়ে || Girl From The North Country
ও, তুমি যদি যাও দেখতে উত্তরের দেশের মেলা
প্রচন্ড বায়ুর দিক যেখানে সীমান্ত রেখা
সেখানকার একজনকে মনে করিয়ে দিয়ো আমার কথা
এক সময় সে ছিল আমার সত্যিকারের ভালবাসা।
ও, তুমি যদি যাও যখন তুষার ঝড়
যখন নদীর পানি জমে যায় গরমের শেষে
দয়া করে দেখে নিয়ো, পরেছে কি নাসে গরমের কাপড়
প্রচন্ড ঝড়ো বাতাসে সুরক্ষিত রাখতে নিজেকে।
দয়া করে আমার হয়ে দেখে নিয়ো ঝুলে আছে কি না তাঁর লম্বা চুল
দেখে নিয়ো বেনি হয়ে নেমেছে কিনা স্তনে
দয়া করে আমার হয়ে দেখে নিয়ো ঝুলে আছে কি না তাঁর লম্বা চুল
তাঁকে আমার এভাবে মনে পড়ে।
আমি অবাক হয়ে যাব, আমার কথা যদি তাঁর আদৌ মনে পড়ে
বহুবার আমি প্রার্থনা করেছি
আমার রাতের অন্ধকারে
আমার দিনের আলোতে।
তাই, তুমি যদি যাও দেখতে উত্তরের দেশের মেলা
প্রচণ্ড বায়ুর দিক যেখানে সীমান্ত রেখা
সেখানকার একজনকে মনে করিয়ে দিয়ো আমার কথা
এক সময় সে ছিল আমার সত্যিকারের ভালবাসা।
ঝড় থেকে আশ্রয়ে || Shelter From The Storm
সেখানে জীবন ছিন অন্যরকম, এক প্রকার পরিশ্রান্ত এবং রক্তাক্ত
যখন গুণ ছিল কৃষ্ণত্ব এবং রাস্তা ছিল কর্দমাক্ত।
আমি বন্যতা থেকে এলাম, আকার বিহীন একটি সৃষ্টি
“ভেতরে এসো” বলে তিনি জানালেন, “আমি তোমাকে ঝড় থেকে আশ্রয় দেব”।
এবং আমি মারা গেলে, পুনরায় তুমি নিশ্চিতভাবে পার বিশ্রাম নিতে
আমি তাঁর জন্য সর্বোচ্চ করব, সে কথাই দিয়েছি তাঁকে
ইস্পাত চক্ষু-মৃত-পৃথিবী, এবং যে মানুষেরা উষ্ণ হবার জন্য লড়াইরত
“ভেতরে এসো” বলে তিনি জানালেন, “আমি তোমাকে ঝড় থেকে আশ্রয় দেব”।
আমাদের মাঝে কোন কথা হয়নি, সেখানে ছিল কিছুটা ঝুঁকি
সেই হিসেবে এখনো অমিমাংসিত অনেক কিছু।
একটা জায়গার কথা চিন্তা কর যেখানে সব সময় শান্তি এবং উষ্ণতা
“ভেতরে এসো” বলে তিনি জানালেন, “আমি তোমাকে ঝড় থেকে আশ্রয় দেব”।
ঢাকা পড়লাম শান্তিতে, ক্লান্তি থেকে অবমুক্ত করল আমায়,
অবিমিশ্রিত হলাম ঝোপের ভিতর এবং উড়ে গেলাম সমীরণ রেখায়
যেন তাড়া খাওয়া কুমির শস্যক্ষেত নষ্ট করে পালিয়েছে।
“ভেতরে এসো” বলে তিনি জানালেন, “আমি তোমাকে ঝড় থেকে আশ্রয় দেব”।
হঠাৎ আমি ঘুরে দাঁড়ালাম এবং তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
কোমরে রূপালি কোমরবন্ধ এবং খোঁপায় ফুল
তিনি আমার দিকে দরদ নিয়ে এগিয়ে এলেন এবং কাঁটার মুকুট তুললেন
“ভেতরে এসো” বলে তিনি জানালেন, “আমি তোমাকে ঝড় থেকে আশ্রয় দেব”।
তখন আমাদের মাঝে একটি দেয়াল, সেখানে কিছু হারিয়েছে
আমি বেশ আবেশ নিলাম, এবং সংকেত পেলাম অতিক্রম করার
ঠিক যেন ভুলে যাওয়া দীর্ঘ সকাল থেকে চিন্তার শুরু
“ভেতরে এসো” বলে তিনি জানালেন, “আমি তোমাকে ঝড় থেকে আশ্রয় দেব”।
রুক্ষ পথে হাঁটছে সহকারী আর অগ্রবর্তীজন পাহাড়ে উঠছে
কিন্তু কিছুই ধর্তব্য নয়, শুধু মৃত্যু গণনাযোগ্য
এবং একজন বাম চোখা ডোম, সে বাঁশিতে ফুঁ দিচ্ছে
“ভেতরে এসো” বলে তিনি জানালেন, “আমি তোমাকে ঝড় থেকে আশ্রয় দেব”।
একটি ছোট পাহাড় টিলার গ্রামে তাঁরা আমার জামা কাপড় বাজি রাখল
আমি মুক্তির জন্য কথা বললাম এবং তাঁরা আমাকে মৃত্যুর ওষুধ দিল
আমি সরলতা প্রদর্শন করলাম এবং পেলাম গালমন্দ
“ভেতরে এসো” বলে তিনি জানালেন, “আমি তোমাকে ঝড় থেকে আশ্রয় দেব”।
হ্যাঁ, আমি বিদেশে বসবাস করছি কিন্তু আমি সীমান্ত পেরিয়ে যেতে বাধ্য
সৌন্দর্য ক্ষুরের ডগা একদিন আমি নিজের করে নেব
যদি আমি তাঁর এবং স্রষ্টার জন্মের সময়কে ঘুরিয়ে দিতে পারি।
“ভেতরে এসো” বলে তিনি জানালেন, “আমি তোমাকে ঝড় থেকে আশ্রয় দেব”।
স্বর্গের দরজায় কড়া নাড়ছি || Knocking on Heaven’s Door
মা, খুলে নাও এই ব্যাজ আমার
এটি ব্যবহার করতে পারব না আর আমি
ঘনায়মান অন্ধকারে দেখতে পাচ্ছি না আর
মনে হয় স্বর্গের দরজায় কড়া নাড়ছি।
ঠক-ঠক করে কড়া নাড়ছি স্বর্গের দরজায়
ঠক-ঠক করে কড়া নাড়ছি স্বর্গের দরজায়
ঠক-ঠক করে কড়া নাড়ছি স্বর্গের দরজায়
ঠক-ঠক করে কড়া নাড়ছি স্বর্গের দরজায়
মা, আমার বন্দুকগুলো রেখে দাও মাটিতে
গুলি করতে পারছি না আর আমি
সেই ঠাণ্ডা কালো মেঘ নেমে আসছে
মনে হয় স্বর্গের দরজায় কড়া নাড়ছি।
ঠক-ঠক করে কড়া নাড়ছি স্বর্গের দরজায়
ঠক-ঠক করে কড়া নাড়ছি স্বর্গের দরজায়
ঠক-ঠক করে কড়া নাড়ছি স্বর্গের দরজায়
ঠক-ঠক করে কড়া নাড়ছি স্বর্গের দরজায়
সময়গুলো বদলে যাচ্ছে || The Times They Are A-Changin’
এসো দাঁড়াও জটলা বেঁধে
তোমরা যেখানেই যাচ্ছ হেঁটে
এই কথা মেনে নাও পানি
জমছে তোমাদের চারিদিকে
এবং স্বীকার করে নাও
ডুববে তুমি পানিতে।
যদি তোমার সময় বেঁচে থাকার মত হয়
তুমি বরং সাঁতার কাটো, নয়তো ডুববে পাথরের মত।
সময়গুলো বদলে যাচ্ছে।
এসো লেখক, সমালোচক
যারা লেখনীতে ভবিষ্যত দেখো
এবং দৃষ্টি প্রসারিত করো।
সুযোগ পুনরায় আসবে না
এবং এতো দ্রুত কিছু বলো না
চাকা এখনো ঘূর্ণায়মান
এবং বলা যায় না কারো নাম
এখনকার পরাজিত একটু পরে বিজয়ী হতে পারে
সময়গুলো বদলে যাচ্ছে।
এসো সংসদ সদস্য, নেতৃবৃন্দ
কান পেতে ডাক শুনো
দরজায় দাঁড়িয়ে থেকো না
হল ঘরের ভেতর ভিড় করো না।
সে চোট পাবে
যে দাঁড়িয়ে থাকবে জটলা করে
জানলাগুলো নড়ে উঠবে, কম্পিত হবে দেয়ালগুলো
সময়গুলো বদলে যাচ্ছে।
এসো মায়েরা, বাবারা
মাঠের ভেতর দিয়ে।
এবং সমালোচনা করো না
যেটা বোঝো না
তোমাদের ছেলেরা এবং মেয়েরা
তোমাদের আজ্ঞাধীন থাকবে।
পুরোনো রাস্তাগুলো দ্রুত ভেঙ্গে পড়বে
দয়া করে নতুন পথ থেকে সরে দাড়াঁও যদি কাজে হাত না লাগাও।
সময়গুলো বদলে যাচ্ছে।
রেখাটি আঁকা হচ্ছে
অভিশাপ মুছে যাচ্ছে।
ধীর গতির একটি
পরে দ্রুত হবে।
এখনকার বর্তমান
পরে অতীত হবে।
ক্রমগুলো বদলে যাচ্ছে
এবং এখন যে প্রথম পরে তাঁর হবে শেষ অবস্থান।
সময়গুলো বদলে যাচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন