সোমবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৫

উত্তম দত্ত -এর তিনটি কবিতা

এক.
নীল চিঠি
তোমার চোখের জল জমিয়ে রেখেছি করতলে
আদিগন্ত ফসলের মাঠ ভরে আছে প্রিয় রোমন্থনে
সাজানো তৈজসপত্র ভেসে যাচ্ছে মণিকর্ণিকার জলে
ফেরিঘাটে কেউ নেই, তবু মুক্তো নিয়ে বসে আছি
এই ধানবনে ।
যে ঈগল তোমাকে আলো দেখাবে বলে একদিন
আগুনের দেশে নিয়ে গেল, আমি তার পাখনায়
লিখে দেব বসন্তের শান্ত শিলালিপি, লিখে দেব সুপ্রাচীন
জাতকের গাথা, বোধিসত্ত্বের নাম লিখে গেঁথে দেব
সোনালি ডানায় ।
তোমার সমস্ত বিষাদ লুকিয়ে রেখেছি করতলে
লুকিয়ে রেখেছি ব্যক্তিগত ফেরিঘাটে মস্ত এক সুবর্ণগোধিকা
ঠোঁটে তার সোনার মোহর , মোহনার জলে
সে ভাসিয়েছে নীল চিঠি : ‘পুরোনো নূপুর খুলে এই শীতে
একদিন চলে এসো একা একা’ ।
___________________
দুই.
মানুষ
ঘাসের ভিতরে কাঁচপোকা হয়ে শুয়ে থেকে
আমি দেখেছি মানুষের গুপ্ত সিফিলিস।
ঝকঝকে জুতোর ভেতরে দেখেছি ছেঁড়া মোজা
বসন্তের ওড়নার নিচে কবেকার বিষণ্ণ অন্তর্বাস
সুবর্ণ-কঙ্কনের মধ্যে জমে থাকা কঠিন বিষাদ
আর রুপোর এসট্রের বুকে ছাই-রঙা অশ্রুবিন্দু দেখে
আমি মানুষের মহিমার কথা লিখে রাখি।
___________________
তিন.
এসো
বাতাস এখনো তেমন বৈরী নয়
রাষ্ট্র এখনো খামচে ধরে নি টুঁটি
মৃত্যু এখনো কয়েকশ গজ দূরে
চাঁদের বাগানে দেখছি না পোড়া রুটি ।
অতএব এসো চুপি চুপি এই বেলা
আঁচলে জড়িয়ে হাজার হাজার পাখি
পায়ের নূপুরে নিঝুমগড়ের আলো
কিছু কথা বলা আজো রয়ে গেছে বাকি ।
____________________

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন