তৈলাক্ত বাতাস
তখনো ভোর হয়নি
খেয়া ঘাটে মাঝি নাও ভেরায় নি
জেলেরা জাল গুটায়নি
চাষীর সকাল হয়নি
গুমোট অন্ধকারে বাতাসের বেগ বেড়ে গেল
নদীর ঢেউ আচড়ে পড়ল তীরে
অজানা ঝড়ে শিরায় শিরায় জেগে উঠল বাঙালিয়ানা
মাঝি মাল্লার চেতনায় প্রতিজ্ঞা-হুংকারে
সকালের সূর্য দ্বিধা আর বিভক্ততায় বিলম্বিত হয়ে পড়ল
বাংলার আকাশে ছড়িয়ে সেই অমর বাণী
বৈঠা হাতে, কাস্তি হাতে জেগে উঠল কৃষক-শ্রমিক-জনতা
কই বাহে! কোনঠে সবায়
জাগছে এবার বাঙালির হাল।
সেলিম-তারামন-আজাদ-শিপু গামছা হাতে
আঁচল পেঁচিয়ে ছিনিয়ে আনল সবুজ বাংলা
বসুধা পেল অনিন্দ্য সুন্দর এক মুঠো মানচিত্র
আমার সোনার বাংলাদেশ।
আমরা পেলাম নতুন সকাল
মুক্ত হলো নিল আকাশ
নির্মল আনন্দের সুবাসিত বাংলা
আহা! কি রুপ মাঠের পর মাঠ জুড়ে সরিষা ফুল
কিন্তু তবুও ঝড় থামেনি
এখনো ফেলানী-নাজনীন-তনুরা বিসর্জনের নাম
এখনো পরাধীনতার চাঁদ উঠে আকাশে
সেই চাঁদে অশুর হো হো করে হাসে
কালের হিংস্রতায়
পুড়িয়ে যায় ঘর-বাড়ি-অফিস-আদালত এবং জ্যান্ত মানুষ
পুড়ে যায় নিষ্পাপ-কোমল দুই বছেরের শিশু
এতো দহনের নয় ছয় খেলা
ঘুমানোর অপেক্ষায় নিস্পেষিত নিরীহ বাংলার মুখ
এখন তো মফিজ নামটি বাংলা গালি দেয়ার নব্য সংস্করণ
ক্ষুধা মঙ্গা সেতো অংপুরের মানুষদের ভোটার আইডি কার্ড
আর বিজয় মানে ধব ধবে সাদা প্রাডো গাড়িতে লাল সবুজের পতাকা উড়ানো
ফাইভ স্টার হোটেলে-নিশীতে
রেড ওয়াইনের বোতলে দশ টাকা কেজি চালের পানীয় বুদবুদ ফেনা তোলে।
হায়রে আমার স্বোপার্জিত স্বাধীনতা
এখনো তোমার বাতাসে তৈলাক্ত ধূলি ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন