তোমাকে একটা পতাকা দিয়ে যাই, বরং
প্রিয় স্বদেশ,
প্রিয় জন্মভূমি,
আমি নতজানু প্রার্থনায় ক্ষমাপ্রার্থী।
আমি ক্ষমাপ্রার্থী এখনও তোমার ক্রমাগত রক্তক্ষরণে।
আমার সামনে রঙ উঠে যাওয়া কিন্তু সুতীব্র লালে
আচ্ছাদিত ডায়েরী একাত্তর, জ্বলজ্বল করছে ভেতরের
শব্দ-বাক্য-হাইফেন-দাড়ি-কমা গুলো।
আমি পড়ছি,
আমি চোখ মুছছি,
আমি কাঁদছি না,
আমি হাসছি না,
কিন্তু আমি চোখ মুছছি।
আমার চোয়াল দৃঢ় হচ্ছেনা, সেই লজ্জ্বায় আমি চোখ মুছছি।
শেষ কয়েক লাইনে আমি শব্দঋণগ্রস্ত হয়ে
দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছি ক্রমাগতভাবে।
"তোমাকে কোনও কিছু দিতে না পারার আক্ষেপ আমার আমৃত্যু।
তাই, তোমাকে...
তোমাকে বরং ক্যালেন্ডারের কয়েকটা রক্তঝরা দিন দিয়ে যাই,
দিয়ে যাই একটা পতাকা,
দিয়ে যাই চার অক্ষরের - স্বাধীনতা।
যা চাষবাস করে বড় হয়ে উঠলে তুমি!
তোমাকে একটা কবিতা,
একটা দারুন ফাগুনের পোস্টার,
একটা রক্তরঞ্জিত মানচিত্র দিয়ে যাই।
যা বেঁচে দিয়ে দীর্ঘ হয়ে উঠলে ইউক্যালিপটাসের মতন!
তোমাকে বরং একটা থ্রি-নট থ্রি!
একটা ক্র্যাকপ্লাটুনের গল্প!
ত্রিশ লক্ষ শহীদ, তিন লক্ষ বীরাঙ্গনা!
নয় সেক্টর, একটা ছাব্বিশ দিয়ে যাই।
যা নিয়ে কুমিরের কান্না প্রসব করে রক্তে রঞ্জিত লাল নোট
গুনে গুনে হয়রান হলেও, বিকৃতকণ্ঠ রোধ হলোনা সংখ্যাতত্ত্ব
নাটিকায়।
শেষমেশ
কিছুই দিতে না পেরে হানাদারের হাতে নিহত আমি,
দিবসীয় ইরেকশনে আমাকে মনে করার জন্য,
তোমাকে দিয়ে যাই একটা– বাংলাদেশ, প্রিয় অনুজ।“
অতঃপর অগ্রজের ডায়েরী গুটিয়ে,
আমি স্তব্ধ, বাকরুদ্ধ হয়ে কেবোল শুয়েই থাকতে পারি।
©লেখক : সোয়েব মাহমুদ, ঢাকা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন